মানিকগঞ্জে মহাসড়কে চলাচলে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দাবিতে বাস মালিকদের মানববন্ধন
আপডেট সময় :
২০২৫-০৭-২৩ ১১:২৭:১২
মানিকগঞ্জে মহাসড়কে চলাচলে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দাবিতে বাস মালিকদের মানববন্ধন
আবু বক্কর ছিদ্দিক- মানিকগঞ্জে গার্মেন্টস শিল্পখাতে শ্রমিক পরিবহন কাজে নিয়োজিত পল্লীসেবাসহ অন্যান্য ব্যানারের বাস-মিনিবাসের কাগজপত্র হাল নাগাদের জন্য পূর্বের হয়রানীমূলক প্রক্রিয়া বাতিলসহ নীতিমালা সংশোধন, পরিমার্জন ও সংস্কার করতঃ বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা সহজীকরনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিক নির্দেশনা প্রদান এবং হালনাগাদকরণের যৌক্তিক সময় প্রদান অথবা মহাসড়কে চলাচলের উপর আরোপিত বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে পল্লীসেবা বাস মালিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।
২২জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার সময় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানিকগঞ্জ পল্লীসেবা বাস মালিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মোঃ বাহার উদ্দিন এর নেতৃত্বে বাস মালিক সমিতির বিভিন্ন দাবি দাওয়ার বিষয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বাস মালিকদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবি দাওয়া সম্পর্কিত বিষয়ে বর্তমান অন্তরবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের জন্য একটি কপি জেলা প্রশাসক এর প্রতিনিধির নিকট হস্তান্তর করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মানিকগঞ্জ পল্লীসেবা বাস মালিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ইউনিয়ন মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ রাজা মিয়া।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানিকগঞ্জ জেলা ও ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন গার্মেন্টস এ কর্মরত নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের পরিবহন করার জন্য স্বল্প ভাড়ায় বিভিন্ন পল্লী এলাকা থেকে কর্মীদের আনা নেওয়া করা হইতেছে। তারাসীমা এ্যাপারেলস, এ.কে.এইচ, মাহমুদা এ্যাপারেলস ও গ্রাফিক্সসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস এ প্রায় ২শতাধিক বাসগুলো সকাল-বিকাল ২ টাইম চলাচল ব্যতিত মহাসড়কে যাত্রী পরিবহন করে না, বন্ধ করে রাখা হয়।
এতে করে মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যাতায়াতে কোন ব্যাঘাত ঘটে না। বর্তমানে সরকারের নির্দেশনায় বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রে চলতি মাস থেকে 'পরিবহনের ইকোনোমিক লাইফ শেষে তা আর মহাসড়কে চলতে পারবে না' মর্মে যে আইন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তাতে করে গার্মেন্টস সেক্টরে পরিবহন সংকট দেখা দেওয়ার পাশাপাশি হাজারো পরিবারসহ কয়েক লাখ শ্রমিক তার আয়ের উৎস হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ার এবং গার্মেন্টস সেক্টরটি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে, বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ নতুন করে গাড়ীর ফিটনেস কিংবা রোড পারমিট দিচ্ছে না। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের প্রদানকৃত তথাকথিত ফিটনেস এবং রোড পারমিট সম্পর্কে ভুক্তবোগী জনগনের ধারনা হচ্ছে এটা টাকা হলেই মিলেছে আবার বিপরীতক্রমে টাকা না দিলে মিলে নাই। আসলে এটা একটা কাগজের তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া ছাড়া কিছুই না।
কেননা, গাড়ীর ফিটনেস হলো কারিগরী বা টেকনিক্যাল বিষয়। গাড়ীতে কারিগরী ত্রুটি থাকলে সেটাকে যান্ত্রিক আপডেট বা মুডিফাই করে অবশ্যই চলার উপযোগী করা যায়। গাড়ীর কাগজপত্র আপডেট না থাকার মানে এই না যে, পরিবহনগুলো অকেজো হয়ে গেছে বা চলাচলের উপযোগী নয়। শুধুমাত্র কাগজ কলমেই মেয়াদউত্তীর্ন বাস্তবিক পক্ষে শ্রমিক পরিবহনের বাসগুলো বছরের পর বছর চলছে কোন রকম সমস্যা ছাড়াই। সড়কে দূর্ঘটনা ঘটে কখনো গাড়ী চালকের অদক্ষতা, অসুস্থতা, নিয়ন্ত্রনহীনতা, কখনো বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন, যত্রতত্র পার্কিং, সিগনাল না বুঝে কিংবা না মেনে গাড়ী চালনা করা ইত্যাদি।
তবুও মহাসড়কের দূর্ঘটনাকে, দায়সাড়া ভাবে চাপিয়ে দেয়া হয়ে থাকে গাড়ীর ফিটনেস নামক একখন্ড কাগজের উপর। ঐ ফিটনেস কি গাড়ী নিয়ন্ত্রন করে বা চালনা করে? তবুও যানবাহনের উপর শুধু নিয়ন্ত্রন আরোপ কিংবা জবাবদিহীতার জন্য নয়, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ইত্যাদির প্রয়োজন রাষ্ট্রের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে। একদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ের দিকে নজর না দিয়ে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ নতুন করে কাগজপত্র আপডেট করে দিচ্ছে না।
অন্যদিকে, ৪০/৫০ লক্ষ টাকা পুঁজি খাটিয়ে নতুন বাস ক্রয় করে গার্মেন্টস এর স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের নিকট থেকে ভাড়া আদায় করা সম্ভবপর হবে না বলেই বাস মালিকেরা মেয়াদউত্তীর্ণ কাগজপত্র দিয়েই গাড়ী চালিয়ে আসিতেছে। বাস মালিকেরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে চায় না, বাস মালিকেরা চায় বিভিন্ন গার্মেন্টস/পোশাক শিল্পখাত সচল রাখতে শ্রমিক পরিবহন কাজে নিয়োজিত বাস-মিনিবাসের কাগজপত্র হাল নাগাদের জন্য পূর্বের হয়রানীমূলক প্রক্রিয়া বাতিলসহ নীতিমালা সংশোধন পরিমার্জন ও সংস্কার করতঃ বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমস্ত সিস্টেম সহজীকরনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।
সেই লক্ষে জরুরী ভিত্তিতে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে রোডে চলাচলের উপযোগী পল্লী সেবা ব্যানারের গাড়ীগুলোকে তালিকাভুক্ত করে জরিমানা মওকুফের আওতায় নামে মাত্র ফি প্রদান সাপেক্ষে নতুন করে ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট রি-ইস্যু করা প্রয়োজন। এসকল বিষয়গুলো সদয়ভাবে বিবেচনা ব্যতিত একতরফা সিদ্ধান্তে যদি কাগজপত্র হালনাগাত এর অজুহাতে গার্মেন্টস/পোশাক শিল্পখাতে শ্রমিক পরিবহন কাজে নিয়োজিত গাড়ীর চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় তবে এর বিরুপ প্রভাবে গার্মেন্টস সেক্টর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হইবে।
সে লক্ষ্যে বাস মালিকগণের দাবী-১। মিনিবাস গুলোকে তালিকাভুক্ত করে জরিমানা মওকুফের আওতায় নামে মাত্র ফি প্রদান সাপেক্ষে নতুন করে ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট রি-ইস্যু করতে হবে। ২। চলাচলের উপযোগী বাস এর নতুন করে ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট রি-ইস্যুকরনের পূর্ব পর্যন্ত চলাচলের উপর আরোপিত বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতে হবে। ৩। বাসের কাগজপত্র হাল নাগাদের জন্য পূর্বের হয়রানীমূলক প্রক্রিয়া বাতিলসহ নীতিমালা সংশোধন পরিমার্জন ও সংস্কার করতঃ বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা সহজীকরনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিক নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স